শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়
শ্বাসকষ্ট হলে করণীয়
শ্বাসকষ্ট বা হাঁপান না কমলে দ্রুত কাছাকাছি হাসপাতালে নিতে হবে বাই নেবুলাইজার যন্ত্রের সাহায্য লাগবে। হাসপাতালে প্রচার আগ পর্যন্ত ৫ চাপ করে ইনহেলার নিতে থাকবেন। শুরুতেই জিব, নখ বা আঙ্গুল নীল হয়ে এলে, শ্বাসকষ্টের জন্য কথা পর্যন্ত না বলতে পারলে বা চেতনা হারিয়ে যেতে থাকলে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া ভালো।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে কি করবেন
শ্বাসকষ্টের সমস্যা নানা রোগের উপসর্গ। এটি কোন রোগ নয়। ঘন ঘন শ্বাস ওঠা নামা, দম বন্ধ অনুভূতি এসব হলে আমরা বলি শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। তবে শ্বাসকষ্ট নিজে কোন রোগ নয়। শ্বাসকষ্ট হলে প্রথমে মাথায় আসে হৃদরোগ আর ফুসফুসের নানা জটিলতার কথা। কারণ এসব রোগকে আমরা ভয় পাই । এছাড়া ঠান্ডা কাশি হলেও শ্বাসের সমস্যা হতে পারে।
দুষিত বায়ুতে শ্বাস নিতে নিতে আমাদের শরীরের বারোটা বেজে যায়। বিশেষ করে অ্যাজমা এর মত জটিল অসুখে আক্রান্ত হচ্ছে না অনেকেই। আর এইসব রোগের প্রথম পড়তে হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যা... এই রোগের প্রথম পর্যায়ে চিকিৎসা নিলে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সম্ভাবনা বাড়ে। তাই সমস্যা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তাছাড়া হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া সম্ভব না হলে বাড়িতে কিছু নিয়ম মেনে চলত হবে। তাহলে কিছুটা হলেও এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে যে সকল কৌশল অনুসরণ করা যেতে পারে
- হঠাৎ শ্বাসকষ্ট হলে বালিশ দিয়ে মাথার দিকটা উঁচু করে কাত হয়ে শুয়ে থাকতে হবে। তখন হাঁটু সামান্য ভাঁজ করা যেতে পারে।
- চেয়ারে বসে টেবিলের উপর বারিশ রেখে তাতে মাথা নিচু করে শুলে ভালো বোধ করবেন।
- আবার একটা চেয়ার কে সাপোর্ট হিসেবে ব্যবহার করে ঝুঁকে থাকলেও এই সমস্যা কিছুটা হলেও কমে।
- দেয়াল থেকে এক ফুট দূরত্বে পা রেখে দেয়ালে শরীর হেলান দিয়ে দাঁড়ালে শ্বাসকষ্ট অনেকটা কমে যায়।
কখন বুঝবেন শ্বাসকষ্ট হচ্ছে
যাদের হাঁপানি আছে তারা মাঝ রাতে কিংবা ভোরের দিকে ঘুম ভেঙ্গে বিছানায় উঠে বসে থাকে এবং সেই সময় তাদের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। তারা শুনতে পান রোগের বুকের ভেতর শব্দ হচ্ছে। তখন এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হয় যে, তার দম বন্ধ হয়ে আসছে। প্রথমদিকে হালকা শ্বাসকষ্ট এবং তা বেশিরভাগ সময় ক্ষণস্থায়ী হয়।
এ ক্ষেত্রে কতগুলো লক্ষণ দেখা যায়, হাঁচ্ নাক বা চোখ দিয়ে পানি পড়া, নাক চোখ মুখ চুলকানোর ইত্যাদি। বিশেষ করে ঋতু পরিবর্তনে এগুলা বেশি চোখে পড়ে। তবে অনেকেরই একাধারে শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকে না। বরং তারা ক্ষেত্র বিশেষে এই সমস্যায় আক্রান্ত হন। যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওটার সময় বা হাঁটাচলা করার সময় তাদের হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট শুরু হয়ে যায়। এসব কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যেতে সময় লাগে না।
শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভান্ত ধারণা
আমাদের দেশে বেশিরভাগ মানুষের ধারণা ইনহেলার হল হাঁপানি রোগের শেষ চিকিৎসা। আমাদের অনেকেরই ধারণা ইনহেলার একবার ব্যবহার করলে ভবিষ্যতে আর কোন ওষুধ কাজ করবে না। ইনহেলার হলো এই রোগের প্রাথমিক চিকিৎ... এই ওষুধ সঠিকভাবে নিতে পারলে শ্বাসকষ্ট কমতে সময় লাগে ১৫ মিনিট থেকে এক ঘন্টা। সঠিক পদ্ধতি তবে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
যেসব রোগ থাকলে শ্বাসকষ্ট হয়
সাধারণভাবে, সর্দি-কাশি হলে শ্বাসকষ্ট হয়। অনেকের সাইনোসাইটিস হলেও শ্বাসকষ্ট বাড়ে। সাইনোসাইটিসের ক্ষেত্রে ঠিক ফুসফুস শ্বাসকষ্টের জন্য দায়ী নয়। এক্ষেত্রে নাকের ভেতরে গাত্র প্রদাহে আক্রান্ত হয়ে ফুলে যায়, তাই প্রয়োজনের বাতাস নাক দিয়ে ফুসফুসে ঢুকতে পারে না।
- ফুসফুসে পানি জমে গেলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা দেখা দেয়।
- হৃদপিন্ডের বাম পাশের কার্যকারিত কমে গেলেও ভয়াবহ ভাবে শ্বাসকষ্ট হয়।
- এজমা বা হাঁপানি থাকলে, ব্রংকাইটিসের কারণে ফুসফুসের ব্রংকিউলে কিছু কিছু অংশ বন্ধ হয়ে গেলে হতে পারে।
- আবার কোন কারণে ফুসফুসের ভেতরে ছোট ছোট রক্তনালীর অভ্যন্তরের রক্ত জমাট বেঁধে গেলে হতে পারে।
- ডায়াবেটিস জনিত জটিলতা যেমন ডাইবেটিস কিটো অ্যাসিডোসিস হলে, রক্তে এসিডের মাত্রা বেড়ে গেলেও আপনি শ্বাসকষ্টে ভুগতে পারেন।
তবে, জ্বরের মতো শ্বাসকষ্ট নিজে কোন রোগ নয়। এটি অন্যান্য রোগের লক্ষণ হিসেবে দেখা দেয়। সাধারণত নাক বন্ধ ভাব, সর্দ্ চোখ চুলকানো ও পানি ঝরা, বুকে চাপ ভাব, কাশি, হাঁচ্ দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস ইত্যাদি উপসর্গ শ্বাসকষ্টের সঙ্গে থাকে।
শ্বাসকষ্টের ধরন
শ্বাসকষ্ট সাধারণত দুই ধরনের। প্রথমটি হল একিউট বা তীব্র ধরনের, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই তীব্র শ্বাসকষ্টে পরিণত হয়। এতে অতি দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। দ্বিতীয়টি ক্রনিক বা দীর্ঘ মেয়াদী শ্বাসকষ্ট, যার তীব্রতা প্রথমে কম থাকে এবং পরে বেড়ে যায়।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url