আম অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার উপায়

আমের আচার দীর্ঘদিন সংরক্ষণের উপায় গোটা আম রাখতে চাইলে দু-চারটি করে আম নিয়ে প্রথমে কাগজের প্যাকেটে মুড়ে প্লাস্টিকের প্যাকেটে ঢুকিয়ে ভালো করে মুখ বন্ধ করে রেখে দিন ফ্রিজে।
আম অনেকদিন সংরক্ষণ করে রাখার উপায়
এতে করে দীর্ঘদিন ভালো থাকবে এবং বের করে সারা বছর খেতে পারবেন। আইসক্রিমের মত করেও আম সংরক্ষণ করা যাবে। প্রথমে আমের রস করে নিয়ে আইসক্রিমের কাপে ঢেলে নিয়ে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন এবং পরে তা আইসক্রিমের মতো খাওয়া যাবে।

কাঁচা ও পাকা আম সংরক্ষণ 

কথায় আছে,

"আমে ধান তেতুলে বান"

অর্থাৎ আম বেশি হলে ধানের ফলনও বেশি হয়। আমার আমের স্বাদ নেওয়ায় নয় বরং বলা চলে গ্রীষ্মকাল থেকে গ্রামীণ জীবনের একটি অংশ ফলের রাজা হল আম। আর এই খনার বচন থেকে বাঙালি জীবনে আমের অবস্থান সম্পর্কে সহজেই কিছুটা অনুমান করা যায়। এমনকি বাংলার অনেক আচার-অনুষ্ঠানেও আছে যা আমকেন্দ্রিক। সাধারণত বৈশাখ মাস থেকেই গাছে গাছে শুরু করলেও মূলত জৈষ্ঠ মাস থেকেই পরিপূর্ণ স্বাদ পাওয়া যায় পাকা আমের। আম এমন একটি ফল যার কাঁচা বা পাকা দুই সাধেরই কদর অনেক বেশি।

প্রায় ৬ হাজার বছরের পুরনো ফল হল আম। অসাধারণ স্বাদ ও গন্ধের মিশেলে এই ফলের গাছকে জাতীয় বৃক্ষ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে আমাদের এই বাংলাদেশে। আম সারা বছর পাওয়া যায় না তবে আধুনিক পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে রাখা যায়। কিন্তু স্বাদ কিছুটা কম হয়। কাঁচা ও পাকা দুই ধরনের আমই জ্যাম, জেলি বা আসার না বানিয়ে সংরক্ষণ করা যাবে। ফ্রিজে বরফ করে সংরক্ষণ করা গেলেও একটু বেশি দিন খাওয়া যাবে। তবে বরফ না করেও বা ফ্রিজে না রেখেও কয়েকদিন পর্যন্ত আম ভালো রাখা সম্ভব। চলুন জেনে নেওয়া যাক আম সংরক্ষণের উপায়-

কাঁচা আম

দীর্ঘদিনের জন্য কাঁচা আম সংরক্ষণ করতে চাইলে আম চার টুকরো করে কয়েক মিনিট ফুটন্ত পানিতে রেখে তুলে নিতে হবে। এবার ভালোমতো পানি শুকিয়ে বায়ুরোধক পাত্রে পাতলা করে সাজিয়ে সংরক্ষণ করা যাবে। অল্প কিছুদিনের জন্য আম সংরক্ষণ করতে চাইলে আমি লবণ ও হলুদ মাখিয়ে রোদে শুকিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে পারেন। ফ্রিজে সংরক্ষণ করতে না চাইলে প্রথমে রোদে শুকিয়ে ভালো মানের সরিষার তেলে ডুবিয়ে রেখে আম অনেক দিন সংরক্ষণ করতে পারবেন।

আধা পাকা আম

আধা পাকা আম সংরক্ষণের জন্য খোসা সহ আম দুই টুকরো করে বায়ুরোধক পাত্রে রাখতে পারেন।

পাকা আম

পাকা আম কচলে নিয়ে বা কেটে ব্লেন্ডারে পাতলা মিশ্রণ তৈরি করে ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করা যায়। তবে লম্বা সময় থাকলে সাত ও ঘ্রাণ কমে যায়।

তবে অনেকদিনের জন্য সংরক্ষণ করতে চাইলে ছোট ছোট প্যাকেটে রাখতে হবে যেন একেবারেই শেষ হয়ে যায়। কারণ বারবার ফ্রিজ থেকে বের করলে আম নষ্ট হয়ে যাবে এবং পুষ্টিগুনো কমে যাবে।

সারা বছর আম সংরক্ষণের উপায়

আম পাওয়া যায় কম বেশি তিন মাস। বারো মাস আম খেতে না পারার আফসোস তাই রয়ে যায় সবার মনে। আর তাই বারোমাস আম খাওয়ার জন্য অনেকে দীর্ঘদিন আম সংরক্ষণ করে রাখতে চান। দীর্ঘদিন আম সংরক্ষণ করতে চাইলে, যে আমগুলো সংরক্ষণ করবেন সেগুলো বাছাই করুন এবং আমগুলো যেন সতেজ থাকে, পোকামাকড় খাওয়া বা থেতলে যাওয়া যেন না হয়। পাকা আমের খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরো টুকরো করে কেটে, কাঁটা টুকরোগুলো বায়ুশূন্য বক্সে রেখে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। অথবা আম গুলোর রস করে নিয়ে ছোট ছোট বক্সে করে ডিপ ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন।

পাকা আম সংরক্ষণের ৪ পদ্ধতি

বর্তমান সময়ে চলছে আমের মৌসুম। আমের মৌসুমে আম পাওয়া যায় মাত্র দু থেকে তিন মাস। কিন্তু সবারই মনের ইচ্ছা বারো মাস আম খাওয়ার। তাই বারোমাস আম খেতে চাইলে সঠিক উপায় সংরক্ষণ করলে এক বছর পর্যন্ত ভালো থাকবে আম-

সারা বছর আর সংরক্ষণের পদ্ধতিঃ
  • আম টুকরো করে কেটে নিন। আটির চারপাশ থেকে আম কেটে নিয়ে আটি ফেলে দিন। এবার বক্সে আমের টুকরো নিয়ে মুখ বন্ধ করে নিন শক্ত ঢাকনা দিয়ে এবং ডিপ ফ্রিজে রেখে দিন
  • আম সংরক্ষণ করতে পারেন জিপ্লক ব্যাগে। এজন্য আম ছোট টুকরা করে কেটে জিপলক ব্যাগে নিয়ে নিন। মুখ বন্ধ করে সামান্য একটু ফাঁকা রাখুন। ওই ফাঁকা অংশ দিয়ে ঢুকে ভেতরে থাকা বাতাস বের করে মুখ পুরোপুরি সিল করে দিন। এবং রেখে দিন ফ্রিজারে।
  • আমের পিউরি সংরক্ষণ করতে পারেন। এজন্য ব্লেন্ডারের মসৃণ করে ব্লেন্ড করে বরফ জমানোর ট্রিটে করে রেখে দিন ডিপ ফ্রিজে। ১০ থেকে ১২ ঘন্টা পর বের করে ট্রে থেকে আমের বরফগুলো আলাদা করে নিন। সেগুলি জিপ লক ব্যাগে নিয়ে বাতাস বের করে সিল করে দেন এবং ফ্রিজে রেখে দেন।
  • চাইলে আজ তো আম সংরক্ষণ করতে পারেন। আস্ত আম খবরের কাগজ দিয়ে মুড়ে জিপ লক ব্যাগ বা মুখ বন্ধ প্লাস্টিকের রেপে নিয়ে রেখে দিন ফ্রিজে।
মনে রাখবেন, আম সংরক্ষণের ক্ষেত্রে সব সময় ছোট বক্স বা জিপ লক ব্যাগ ব্যবহার করবেন। এতে প্রয়োজনমতো বের করে নেওয়া যাবে। না হলে অল্প খানিকটা আম প্রয়োজন হলে পুরো বক্সটি ডিফ্রস্ট করতে হবে। এতে আমের স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে। চাইলে মোরব্বা, আমসত্ত ্ব কিংবা আমের আচার বাণীও আম সারা বছর খেতে পারেন।

আমের রস কত দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায়?

২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষিত তাজা আন পাস্তুরাইজড জুস যথাক্রমে ১-২ একদিনের মধ্যে খাওয়া যেতে পারে।

আমের পাতা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করে রাখার উপায়

সম্পূর্ণ, না ধোয়া আমের পাতা ফ্রিজে একটি সিল করা পাত্রে সংরক্ষণ করা হলে সর্বোচ্চ 1 সপ্তাহ পর্যন্ত থাকবে। কিছু ভোক্তা খবরের কাগজে পাতা মুড়ে তারপর ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করেন।

শেষ কথা

আম মৌসুমি ফল,তাই বারোমাস পাওয়াও যায়না।কিন্তু আমাদের সকলেরি ইচ্ছে হয় বারোমাস আম খাওয়ার।তাই বারোমাস আম খাইতে হইলে আম ভাল করে সংরক্ষন করে রাখতে হয়।উপরে কিভাবে বারোমাস আম সংরক্ষন করে রাখা যায় তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।যদি আমাদের আর্টিকেলটি ভালো লাগে তাহলে আপনাদের মতামত জানান।

ধন্যবাদ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url