ঘরে বসে আয় করা সেরা ১০ টি উপায়
মোবাইল দিয়ে টাকা ইনকাম করার সহজ কিছু উপায় ইন্টারনেট মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলে যায়। মানুষ এখন অনলাইনে অর্থার জন্য নানা কৌশল প্রয়োগ করছে। অনলাইনে আয়ের নানা পথে তৈরি হয়েছে। তবে অনলাইনে কাজ করে আয় করতে গেলে কোন প্লাটফর্ম ধরে এ করছেন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।অনলাইনে আয় করার নানা সুযোগ থাকলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণার মুখে পড়তে হতে পারে। অনলাইনে কাজ করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়ার সুযোগ নেই। তাই এ ধরনের প্রচারণামূলক কাজের ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে হবে। তবে কিছু অনলাইন প্লাটফর্ম, ওয়েবসাইট ও রিসোর্স আছে যা কাজে লাগে অনলাইনে আয় করতে পারবেন। জেনে নিন এসব সম্পর্কে-
ফ্রিল্যান্সিং
অনলাইন এর ক্ষেত্রে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার বিষয়টি সবচেয়ে জনপ্রিয়। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতার উপর ভিত্তি করে ফিন্যান্স কাজের সুযোগ দেয় কয়েকটি ওয়েবসাইট। সেখানে অ্যাকাউন্ট খুলে দক্ষতা অনুযায়ী কাজের জন্য আবেদন করতে হয়। কাজ দাতা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যোগাযোগ করে ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দেয়। কয়েকটি ওয়েবসাইটে কাজের দক্ষতা বিবরণ জানাতে হয়, যাতে ক্রেতা সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।
এসব সাইটের মধ্যে ফাইবার ডট কম, upwork.com, ফ্রিল্যান্সার ডটকম ওয়ার্ক এন হায়ার ডট কম এ ফ্রিল্যান্সিং কাজ পাওয়া যায়। ঘন্টায় ৫ থেকে ১০০ ডলার পর্যন্ত আয় করা যায় এসব সাইট থেকে। মনে রাখতে হবে কাজ শেষ করার পর কাজদাতার অনুমোদন পেলে তবে অর্থ আর দেবেন তিনি। কাজের রেটিং এবং গ্রাহকের পছন্দ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে দিতে হয় ফ্রিল্যান্সারকে।
নিজের ওয়েবসাইট তৈরি
এখন নিজের ওয়েবসাইট তৈরির জন্য অনলাইনে অনেক উপাদান পাওয়া যায়। এর মধ্যে ডোমেইন নির্বাচন, টেমপ্লেট ও ওয়েবসাইট তৈরির নকশা প্রভৃতি। যখন পাঠক বা দর্শককে ওয়েবসাইটের বিভিন্ন কনটেন্ট সেবা দেওয়ার প্রস্তুতি সারা, তখন গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারেন। গুগলের বিজ্ঞাপন যখন সাইটে দেখানো শুরু হবে এবং তাতে ক্লিক করবে তখন আয় আসতে শুরু করবে। ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বা দর্শক যত বেশি হবে আয়ের পরিমাণ তত বাড়বে।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এই পদ্ধতিতে আয়ের ক্ষেত্র নিজের ওয়েব পেজ বা ব্লগ প্রয়োজন। যখন ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালু হবে, তখন এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের লিংক তাদের যুক্ত করতে পারবেন। যখন আপনার সাইট থেকে ওই প্রতিষ্ঠানের পূর্ণ বাসে বা কোন দর্শক কিনবেন তখনই আপনার আয় আসতে শুরু করবে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন
অনলাইনে ঘরে বসে আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাফিক্স ডিজাইন ভালো উপায়। যারা এ কাজে দক্ষ তারা বিভিন্ন ডিজাইন অনলাইন মার্কেটপ্লেস গুলিতে দিয়ে রাখেন। সেখান থেকে তাদের আয় আসে। তাদের তৈরি একটি পূর্ণ অনেকবার বিক্রি হয় অর্থাৎ একটি ভালো নকশা থেকেই দীর্ঘদিন পর্যন্ত আয় হতে পারে। অনলাইনে এ ধরনের অনেক ওয়েবসাইটে গ্রাফিক্সের কাজ বিক্রি করা যায়। এছাড়া অনলাইন মার্কেটপ্লেসগুলোতেও গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের অনেক চাহিদা রয়েছে।
ভার্চুয়াল সহকারি
এখন ভার্চুয়াল সহকারীদের কাজের ক্ষেত্রে বেড়েছে। ঘন্টা প্রতি আরো বেশি। বাড়ি থেকে কর্পোরেট অফিসের নানা কাজ অনলাইনে করে দেয়ার সুবিধা আছে এখন। ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মী বা নিজের ব্যবসা নিজেই চালানো যায়। বিভিন্ন দক্ষতার ভিত্তিতে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দেয় প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ফোন কল, ইমেইল যোগাযোগ, ইন্টার্নাল রিসার্চ, ডাটা এন্ট্রি, এডিটিং, রাইটিং, ব্লগ, গ্রাফিক্স ডিজাই্ন, টেক সাপোর্ট,সোসাল মিডিয়া ব্যাবস্থাপনার মত কাজ থাকে।
অনুবাদ
ইংরেজি পাশাপাশি অন্য কোন ভাষা ভালোভাবে জানা থাকলে সেই দক্ষতা কাজে লাগে আয় করতে পারেন। বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে বিভিন্ন ডকুমেন্ট অনুবাদ করে আয় করতে পারেন। যাদের স্প্যানিশ, ফ্রেন্স, আরবি, জার্মানসহ অন্যান্য ভাষা জানা আছে এবং এগুলো থেকে ইংরেজি অনুবাদ বা ইংরেজি থেকে সব ভাষায় অনুবাদ করতে পারলে ভালো আয় করতে পারবেন। অনেক সময় কাজদাতারা নিজে সময়ের অভাবে অনুবাদের কাজ ফ্রিল্যান্সারদের দিয়ে করিয়ে নেন। ফ্রিল্যান্সিং সাইডগুলোতে এ ধরনের কাজ পাবেন।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম
ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রাম, স্ন্যাপ চ্যাট, এখন আর শুধু বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য নয়। এগুলো কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারেন। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যান্ডের পক্ষ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া পরিকল্পক দের পশুর অর্থ দেওয়া হয় তাদের ব্যান্ডের প্রসার করার জন্য। অনলাইনে গ্রাহক টানা, প্রচার করার জন্য অবশ্য সৃজনশীলতার দরকার। বিভিন্ন পোস্ট তৈরি, ভিডিওর মাধ্যমে ফেসবুক বা অন্যান্য মাধ্যমে প্রকাশ করে তা ভাইরাল করতে পারলে ভালো অর্থ আসে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ফ্যান ফলোয়ার তৈরি সহ তাদের ধরে রাখতে পশুর ধৈর্য ও প্রাসঙ্গিক বিষয় হওয়া জরুরী।
ওয়েব ডিজাইন
এখনকার অনলাইনের কাজের ক্ষেত্রে ওয়েব ডিজাইনের চাহিদা ব্যাপক। কোন প্রজেক্ট ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সহজে আয় করা যায়। সব ব্যবসায়ী প্রযুক্তিপ্রেমী নন। নিজেদের ওয়েবসাইট তৈরিতে তাদের ওয়েব ডিজাইনারের দরকার পড়ে। যারা ওয়েব ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতে চান নিজেদের ওয়েবসাইট খুলে সেখান থেকেই ছোট্ট ব্যবসার দাড় করাতে পারেন।
ওয়েবসাইট তৈরিতে এখন কোডিং আর ওয়েব ডিজাইন দুটি গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া ওয়েবসাইট ব্যবস্থাপনা ও হালনাগাদের জন্যও ওয়েব ডিজাইনার কে দরকার পড়ে। ফলের ডিজাইনার কে বসে থাকতে হয় না। ক্লায়েন্ট ও কাজের উপর ভিত্তি করে ওয়েব ডিজাইনারের আই বাড়াতে থাকে।
কনটেন্ট রাইটিং
যারা লেখালেখিতে ভালো এবং একাধিক ভাষায় সাবলিং লিখতে পারেন তাদের কাজের জন্য বসে থাকতে হয় না। অনলাইন প্লাটফর্ম গুলোতে কাজ করে বা লিখে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। আর্টিকেল লেখার মানের উপর ভিত্তি করে আয় আসে। কাজ দাতা নির্দিষ্ট নীতি মেনে লেখার জন্য নির্দিষ্ট বিষয় বা নিষে ধরে নিজের দক্ষতা বাড়াতে পারলে আয়ের দ্বারা বেড়ে যায়।
পিটিসি
অনেক ওয়েবসাইট আছে যাতে রাখা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করলে আপনাকে অর্থ দেয়া হবে। এ ধরনের সাইটকে পিটিসি সাইট বলে। প্রকল্প শুরুর আগে নিবন্ধন করতে হয়। তবে মনে রাখতে হবে পিটিসি সাইট গুলো বেশির ভাগ ভুয়া হয়। তাই কাজের আগে নিশ্চিত হতে হবে সেটি প্রকৃত সাইট কিনা। অনেক সময় বন্ধুতে রেফারেন্স দিয়ে আয় করতে পারেন।
এছাড়াও ঘরে বসে আয় করার আরো অনেকগুলো মাধ্যম রয়েছে যেমন-
- ব্লগিং
- ইউটিউবিং
- ডাটা এন্ট্রি
- অনলাইন ব্যবসা
- পেজ মডারেটর
- ভিডিও দেখে টাকা ইনকাম করা
- সোশ্যাল স্পন্সর
- ওয়েবসাইট টেস্ট করা
- নতুন অ্যাপ ইন্সটল করে ইনকাম
- গেম খেলা
বর্তমান সমাজ দিন দিন অনলাইনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে। আর এ কারণে সকলের ইচ্ছা ঘরে বসে কিভাবে ইনকাম করা যায়। বর্তমানে ঘরে বসে ইনকাম করার অনেক মাধ্যম থাকলেও প্রয়োজন হয় দক্ষতার। তাই ঘরে বসে ইনকাম করার জন্য আগে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url